তারুণ্য অভ্যুত্থান ও শত শত তাজা প্রণের বিনিময়ে অর্জিত এই নতুন বাংলাদেশর ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা হতে হবে নিখুঁত ও টেকসই। দেশগঠনে বর্তমান তরুণ সমাজের চিন্তন ও কর্মকাণ্ড প্রমাণ করেছে যে আগামীর বাংলাদেশে তারাই হবে এর মূল কাণ্ডারি। রাষ্ট্রের মেরামত ও সংস্কার একটি দীর্ঘমেয়াদী প্রক্রিয়া। তাই সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা ও নীতিমালা প্রণয়ন করা জরুরি। এছাড়াও বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ খাতে পরিবর্তন ও পরিবর্ধন করা যেতে পারে।
বাংলাদেশ একটি ছোট্ট সল্প আয়ের উন্নয়নশীল দেশ। বিগত বছরগুলোতে দেশকে খুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত করার জন্য নানাবিধ নীতিমালা প্রণয়ন ও কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হয়েছে। তবে এই বিষয়ে আশানুরূপ সাফল্য পাওয়া সম্ভব হয় নি। এই সমন্বয়হীনতার নেপথ্যের কারণ দুর্নীতি। দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনার কারণে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে কর্মসূচি গুলো সতঃস্ফুর্তভাবে আলোর মুখ দেখছে না। তাই দুর্নীতি দমনে সচেষ্ট হওয়া জরুরি। কিন্তু দুঃখের বিষয়, আমাদের দেশে চলমান অব্যবস্থাপনার শিকড় গভীর পর্যন্ত বিস্তৃত হওয়ায় সহসাই এর মূলোৎপাটন করা দুরূহ। তাই প্রথমেই প্রয়োজন এই লক্ষ্যে উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি করা। আইনের সুশাসন ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা গেলে এই পথ অনেকটা সহজ হয়ে যাবে। এছাড়াও আইনের যথাযথ প্রয়োগ ও দ্রুততম সময়ে বিচার লাভে জনগণকে আস্থাশীল করে তুলতে হবে।
নব্য স্বাধীন বাংলাদেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ খাত হতে পারে দেশের স্বাস্থ্য খাত। দেশের জনগণের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করা না গেলে বৃহত্তর উন্নয়ন সম্ভব নয়। তাই স্বাস্থ্য খাতে উন্নত সেবা নিশ্চিত করণে সরকারি বেসরকারি হাসপাতালগুলোর সহাবস্থান প্রয়োজন। সেবার মান উন্নয়ন করে জনগণকে স্বাস্থ্যসেবা গ্রহণে উদ্বুদ্ধ করতে হবে। এছাাড়া সরকারি হাসপাতালে সার্বক্ষণিক সেবা নিশ্চিত করতে পর্যাপ্ত চিকিৎসকের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে হবে। এক্ষেত্রে সেবা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা সহ প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করার দিকে নজর দিতে হবে। অপরদিকে, শিক্ষা ব্যবস্থার সংস্কার এবং টেকসই ও মানসম্পন্ন শিক্ষার বিকাশ এখন সময়ের দাবি। শিক্ষাব্যবস্থাকে যুগোপযোগী, প্রযুক্তিনির্ভর ও আধুনিক করে তুলতে হবে। জাতির ভবিষ্যতকে পুর্নাঙ্গ শিক্ষায় শিক্ষিত করে এই দেশপ্রেম কে জিইয়ে রাখার মহান দায়িত্ব পালন করবে দেশের শিক্ষানীতি। তাই যথাযথ পরিবর্তন ও পরিমার্জন জরুরি। মনে রাখতে হবে আগামীর দেশ গঠণের প্রধান উপকরণ এই দেশপ্রেমিক তারুণ্যের শক্তি। তাদের হাতেই নিরাপদ আগামীর বাংলাদেশ।
Author's Information
মো এমদাদুর রহমান উদয়
স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইন্সটিটিউট ,
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।